নান্দনিক আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

JUST, 29 January, 2024

২৫ জানুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রোজ বৃহস্পতিবার বর্ণিল পথ আলপনা, কেক কাটা, পিঠা উৎসব, গবেষণা প্রদর্শনীর মাধ্যমে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সপ্তদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রস্তুতি শুরু হয় ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রোজ বুধবার থেকেই। উক্ত দিন সকাল থেকেই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আলপনা, পিঠা উৎসবের স্টল ও গবেষণা প্রকল্প প্রদর্শনী স্টল সাজানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করে। ২৫ জানুয়ারী ২০২৪ দিবাগত রাত পর্যন্ত স্টল ও আল্পনার কাজ চলে। পিঠা স্টলে গ্রাম বাংলার একশত ত্রিশের অধিক পিঠার সমাহার ও গ্রামীণ বাংলার নান্দনিক চিত্রটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আলপনার ক্ষেত্রে আবেগ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে দেশের উন্নয়নে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিল ৪র্থ বর্ষের আজমাইন মুহতাদী জোয়ার্দ্দার (১৯০১২৭), মির্জা মহিবুল হাসান (১৯০১১৯), জান্নাতুল তাসমিয়া ময়ূরী (১৯০১৩২) ও নিশাত জাহান তন্দ্রা (১৯০১১১)। মো মাহাবুব আলম নিশাত (১৯০১৪৯) আলপনা ও মাহাবুবা ইসলাম প্রিয়া (১৮০১৪২) পিঠা তৈরি যথাযথভাবে তত্ত্বাবধায়ন করেছে। এছাড়াও সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ৪র্থ বর্ষের মাসুম বিল্লা (১৯০১০১), তানভির হোসেন (১৯০১১৩), মো সজীব হোসেন (১৯০১০৩), নিতায় চন্দ্র দাস (১৯০১২৯), আহসানুল রাহিম সাজিত দিপ্ত (১৯০১৩১), সুমিত্রা পাল (১৯০১৩৪), নয়ন মালাকার (১৯০১২৮), পারভেজ চৌকিদার (১৯০১২৬), মো তসিকুল ইসলাম স্বপন (১৯০১০৮), আব্দুল খালেদ আরাফাত (১৯০১২২), জ্যোতিরন মণ্ডল জয় (১৯০১০৪), মেহেদি হাসান সাগর (১৯০১৫৪) ও তাসনুবা তাসনিম (১৯০১৩৫) সহ ৩য়, ২য়, ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

 

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় ২৫ জানুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০.১৫ মিনিটে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা ও যবিপ্রবির পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। সকাল ১০.২৫ মিনিটে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ জাতির বঙ্গবন্ধু পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ও প্রধান ফটক থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু করেন। শোভাযাত্রা শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটা হয়। এরপর ১০.৪৫ মিনিটে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের পিঠা স্টল ও গবেষণা প্রকল্প প্রদর্শনী স্টলে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ফুলেল ফিতা কেটে স্টল উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ মো. গালিব, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলম হোসেন ও যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও সি এস ই ক্লাবের নির্বাহী পরিষদের সদস্য। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকগণ তাদের পরিবারের সাথে অনুষ্ঠানটি উদযাপন করতে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানের মাঝে বিচারকগণ পিঠা স্টল, গবেষণা প্রকল্প প্রদর্শনী ও আলপনায় তাদের বিচারকার্য সম্পন্ন করেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।

 

যবিপ্রবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এ বছরই প্রথম গবেষণা প্রকল্প প্রদর্শনী স্টলের আয়োজন করা হয়েছিল। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে নিম্নবর্ণিত প্রকল্পসমূহ প্রদর্শিত হয়



ইন্টারগ্যালাক্টিক মার্স এক্সপ্লোরার

সাব্বির আহমেদ (১৯০১১০), জ্যোতিরন মণ্ডল জয় (১৯০১০৪), আহসান মাহমুদ আশিক (১৯০১৪১), রুকসানা খাতুন (১৯০১৪৮)

মার্স(মঙ্গল গ্রহ) এর খুটিনাটি বিষয়গুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে 3D ম্যাপের মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের ম্যাপ, রোভার এবং সেগুলো কোথায় অবস্থান করছে আর প্রধান ৪ রোভার থেকে পাঠানো প্রায় ১০লক্ষেরও বেশি ছবি এই অ্যাপ্লিকেশন থেকে দেখা যাবে। মার্সের দৈনিক আবহাওয়ার আপডেট দেখে সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কেও ধারনা পাওয়া

ভার্চুয়াল ফটো বুথ

সাব্বির আহমেদ (১৯০১১০), খাজা মোহাম্মাদ তানজিল (১৯০১২১)

এখানে ইউজ হয় মেশিন লার্নিং এর ইম্পর্ট্যান্ট কন্সেপ্ট স্যালিয়্যেন্সি। স্যালিয়েন্সি ডিটেকশনের মাধ্যমে আমরা মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট পার্টকে কম ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট থেকে আলাদা করি। ফটোবুথের ক্ষেত্রে মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট হলো যার ছবি তোলা হচ্ছে। এবার ক্রপ করা মানুষকে সেই ইভেন্টের স্পেসিফিক একটা ছবির উপর বসিয়ে নতুন একটা ব্যাকগ্রাউন্ড দেয়া হয়। এরপরে সুন্দর একটা ফ্রেম বসিয়ে পুরো প্রসেস এর ইতি টানা হচ্ছে। এই ছবিটা তো কম্পিউটারে আছে তাহলে যে ছবি তুললো, সে এটা শেয়ার করবে কীভাবে? চিন্তা নেই, সোশাল মিডিয়ায় এই সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করার জন্য মেইল এড্রেস টাইপ করলে সাথে সাথেই চলে যাবে তার মেইলে।


টেলিগ্রাম বট

মো নাফিউর রহমান (১৯০১৫১)

এই প্রজেক্ট এর মাধ্যমে আমরা টেলিগ্রাম অ্যাপটি ব্যবহার করে যে কোন জায়গা থেকে আমাদের কম্পিউটারটি চালু ও বন্ধ করতে পারি।

ডিজিটাল অনলাইন আর জি বি ঘড়ি

মো নাফিউর রহমান (১৯০১৫১)

ডিজিটাল আর জি বি অনলাইন ঘড়ির মাধ্যমে আমরা অটোমেটিক্যালি টাইম সেট করে রাখতে পারি, যার মাধ্যমে আমাদের সময় ও কষ্ট কম হবে।

অটোমেটিক ফিশ ফিডার

মো নাফিউর রহমান (১৯০১৫১)

উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা একটি টাইমার সেট করে রাখতে পারি এবং টাইম অনুযায়ী মাছ সময় মত খাবার পেয়ে যাবে কোন ঝামেলা ছাড়াই, ম্যানুয়ালি কোন কাজ করতে হবে না।

স্বয়ংক্রিয় ওয়াটার পাম্প

মো নাফিউর রহমান (১৯০১৫১)

এই প্রজেক্ট এর মাধ্যমে আমরা পানির পাম্পে একটি সেন্সর লাগিয়ে লাগিয়ে রাখবো এবং সেন্সর টি পানি পূর্ণ হয়ে গেলে পাম্প অফ করে দিবে। আরো এর মাধ্যমে আমরা ট্যাঙ্কে কত পানি আছে সেটা আমরা পরিমাপ করতে পারি।

 অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটিজার ও তাপমাত্রা নির্ণায়ক

মো নাফিউর রহমান (১৯০১৫১)

অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাসের মাধ্যমে আমরা আমাদের হাত যখন যন্ত্রের নিচে নিয়ে আসবে, একটি সেন্সরের মাধ্যমে সেন্স করবে এবং স্যানিটাইজার বের হবে ও একটি সেন্সরের মাধ্যমে আমাদের দেহের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারব।


স্মার্ট ওয়েস্ট বিন

আবদুল্লাহ আল ফাহিম (১৮০১৪০)

প্রজেক্টটি কম্পিউটার ভিশন অ্যালগরিদম ও মেশিন লার্নিং ব্যবহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে সহায়তা করবে যা পরিবেশ দূষণ রোধে এবং ২০৪১ সালের মাঝে স্মার্ট বাংলাদেশ-এ রুপান্তরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এই প্রজেক্টে মাইক্রোকম্পিউটার এর ব্যবহার আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার আরো সহজ করে তুলবে।

 

সর্বোপরি স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করেছে।